চুই
ঝালে গরুর মাংস অনেকের কাছেই এটি জ্বিবে জল আনা খাবারের নাম। ইদানিংকালে ঢাকা
শহরের অনেক রেস্টুরেন্টেই চুই ঝালের গরুর মাসং ভূনা বিক্রয় হয়। তবে আমাদের অনেকের
কাছেই বিষয়টি পরিস্কার নয়। অর্থাৎ চুই ঝাল কি তা অনেকের কাছে অজানা। চুইঝাল একটি অপ্রচলিত মসলা আমাদের দেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনাঞ্চলে সবচেয়ে ভালো চুই উৎপাদন হয়। পিপারাসি পরিবারের সপুষ্পক লতা চুই। এর বৈজ্ঞানিক নাম
Piper chaba। বেশ কয়েরক বছর ধরে ভোজনরসিকদের কাছে চুইয়ের কদর বাড়ছে। মাংসেই চুই বেশি ব্যবহার করা হয়। অনেকে চুই দিয়ে মাছও রান্না করে থাকেন।
চুই মুলত লতাজাতীয় গাছ এর ডাল এবং কান্ড মসলা
হিসাবে ব্যবহার করা হয় আমাদের দেশে দারুচিনি যেমন মসলা হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
চুইএর কান্ড ধূসর
বর্ণের
ও
পাতা
অনেকটা পান পাতার
আকৃতির
সবুজ
রঙের।
চুইএর স্বাদ মুলত ঝাল ঝাল তবে এটি কাঁচা বা শুকনা মরিচের
ঝালের মত নয়। গরু কিংবা খাসির মংসে এটি ব্যবহার করার ফলে এতে এক
অপূর্ব
স্বাদের সৃষ্টি
হয়। মাংসের স্বাদ
বাড়তে
চুই
ঝালের
বিকল্প
নেই।
বিভিন্ন সামাজিক আচার
অনুষ্ঠানসহ ঈদ
পার্বণে ভোজন রসিকদের কাছে চুই ঝালের
কদর
বেড়ে
যায়।
চুই ঝাল শুধু মাত্র মসলা নয় ভেষজ ওষুধ, চুইলতার শিকড়, কাণ্ড, পাতা, ফুল ফল সব অংশই ভেষজগুণ সম্পন্ন ।মানব শরীরের বিভিন্ন রোগ নিবাময়ে এটি কার্যকর। পাকস্থলির গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে, রুচি বাড়াতে,ক্ষুধামন্দা দূর করতে কার্যকর ওষুধ এটা। এছাড়াও পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ সারাতে, সর্দির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মাত্র এক ইঞ্চি পরিমাণ চুই ঝালের সঙ্গে আদা পিষে খেতে পারেন। স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে ঘুম আনতে সহায়তা করে চুই। হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, কাশি, কফ, ডায়রিয়া, রক্তস্বল্পতা, শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে অথবা শরীরের ব্যথা সারাতে পারে এই চুই।
খুলনা সাতক্ষীরা অঞ্চলের বিভিন্ন বাজারে চুই সহজলভ্য যা বিক্রি হয়ে
থাকে
প্রতি
কেজি
২০০
টাকা
থেকে
৫০০
টাকা
পর্যন্ত। শাখা
ডাল
থেকে
শেকড়ে এবং কান্ডে ঝাল
বেশি
বলে
এর
দামও
একটু
বেশি।
শুকনো
চুইয়ের
দাম
আরো
২-৩ গুণ। চুই ঝালকে
কেন্দ্র করে
সাতক্ষীরা, পাটকেলঘাটা, তালায়সহ বেশ
কয়েক
জায়গায়
হোটেল
গড়ে
উঠেছে।
শুধুমাত্র চুইঝাল
দিয়ে
খাসির
মাংসের
কারণে
খুলনার
চুকনগরে আব্বাসের হোটেলের সুখ্যাতি রয়েছে
সারা
দেশে।
0 Comments