নৈসর্গিক
সৌন্দর্য, পাহাড়ি ঝর্ণা আর
সবুজের সমারোহ নিয়ে অপূর্ব এক
দর্শনীয় স্থান খাগড়াছড়ি। আর
এই খাগড়াছড়িরই এক
আকর্ষণীয় স্থান আলুটিলা গুহা/
সুরঙ্গ। প্রায় সিকি কিলোমিটার
দৈর্ঘ্যের এই গুহার মধ্য
দিয়ে মশাল জ্বালিয়ে এক
প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে
যাওয়ার সময় যে রোমাঞ্চকর
অনুভূতি হয় সেটি সত্যিই
অতুলনীয়। ধারণা করা হয়ে
থাকে যে, আজ থেকে
বহু বছর আগে মূলত
পাহাড়ি স্রোতধারার কারণেই জন্ম হয়েছিল
প্রাকৃতিক এই গুহাটির। খাগড়াছড়ি
শহর থেকে প্রায় ৭
কিলোমিটার পশ্চিমে মাটিরাঙা (রাঙ্গামটি নয়) উপজেলার আলুটিলা
গুহা অবস্থিত। আলুটিয়ার পূর্ব নাম ছিল
আরবারী পর্বত।
উইকিপিডিয়ার মতে আলুটিলা গুহা
সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০
ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। গুহাটি দেখতে অনেকটা
ভূ-গর্ভস্থ টানেলের মত যার দৈর্ঘ্য
প্রায় ৩৫০ ফুট। গুহাটির
এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ
দিয়ে বের হতে আনুমানিক
১৫ থেকে ২০ মিনিট
সময় লাগে। গুহাটির উচ্চতা
মাঝে মাঝে খুব কম
হওয়ায় নতজানু হয়ে হেটে
যেতে হয়। স্থানীয়রা একে
বলে মাতাই হাকড় বা
দেবতার গুহা। এটি খাগড়াছড়ির
একটি নামকরা পর্যটন কেন্দ্র। বাংলার দার্জেলিং খ্যাত সাজেক ভ্যালি খাগড়াছড়ির দিঘীনালা হয়ে যেতে হয় পথে হাজাছড়া ঝর্ণা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় খাগড়াছড়ি অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে এলাকার মানুষ এই পাহাড় থেকে বুনো আলু সংগ্রহ করে তা খেয়ে জীবন রক্ষা করেছিল। সেই থেকেই এ টিলার নাম হয় আলুটিলা। এখনো এই টিলায় প্রচুর পরিমাণে বুনো আলু পাওয়া যায়। অন্যদিকে খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে উঁচু (প্রায় ৩ হাজার ফুট) পর্বতের নামই হচ্ছে আলুটিলা।
স্বভাবতই
আলুটিলা সুড়ঙ্গের পথ বেশ অন্ধকার।
কোন প্রকার সূর্যের আলো
প্রবেশ করে না বলে
মশাল নিয়ে ভিতরে প্রবেশ
করতে হয়। পর্যটন কেন্দ্রের
সামনেই মশাল কিনতে পাওয়া
যায় । মশালের
আলোয় সুড়ঙ্গের ভেতরের পাথরগুলোকে দেখতে
বেশ ভালো লাগে। ভিতরের
ঠান্ডা হিমশীতল অবহে চামচিকা ও
বাদুরের আনাগোনায় সুড়ঙ্গের ভিতরে ভূতুরে পরিবেশ
তৈরি করেছে। সুড়ঙ্গের তলদেশ
পিচ্ছিল এবং পাথুরে ও
এর তলদেশে একটি ঝর্ণা
প্রবাহমান।অবশ্য
এক সময় পাহাড়ের পাদদেশ
থেকে গুহার মুখ পর্যন্ত
যেতে দর্শনার্থীদের অনেক কষ্ট করতে
হতো। তবে বর্তমানে জেলা
পরিষদ সেখানে পাকা সিঁড়ি
নির্মাণ করায় এখন পাহাড়ের
চূড়া থেকে সিঁড়ি বেয়ে
চলে যাওয়া যায় সুড়ঙ্গের
মুখ পর্যন্ত।
আলুটিলার ভয়ংকর শীতল সৌন্দর্য্য উপভোগ শেষে দিনের বাকিটা সময় রিসাং ঝর্ণায় সময় কাটাতে পারেন।
আলুটিলার ভয়ংকর শীতল সৌন্দর্য্য উপভোগ শেষে দিনের বাকিটা সময় রিসাং ঝর্ণায় সময় কাটাতে পারেন।
--------------
ভ্রমণের তথ্য --------------
অবস্থান
: ঢাকা খাগড়াছড়ি মহাসড়কের পাশ্বে মাটিরাঙ্গা উপজেলার
আলুটিলা পাহাড়ে।
ভ্রমন
ক্যাটাগরি
: ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি
ভ্রমনে
উপযুক্ত সময়
: সারা
বছর।
যে ভাবে যাবেন : ______________________________
ঢাকার সায়দাবাদ,
কমলাপুর, গাবতলি
থেকে হানিফ,
শ্যমলি, ইউনিক,
সহ প্রায় সবপরিবহনের
বাস প্রতি
রাতেই খাগড়াছড়ি
উদ্দেশ্যে ছেড়ে
যায়। অটো, মোটার
সাইকেল, চাঁদের গাড়িতে অথবা
বাসে করে খাগড়াছড়ি শহর
থেকে আলুটিলায় যাওয়া যায়।
থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা : ______________________________
দুপুরে খাবরের কোন ব্যবস্থা এখানে নেই খাওয়া-দাওয়ার জন্য খাগড়াছড়ি শহরই ভরসা। তবে এখানে হালকা খাবর পাওয়া যাবে।
0 Comments