Disible Copy Pest

header ads

খৈয়াছড়া ঝর্ণা | ধাপে ধাপে রোমাঞ্চ ছড়ায়

অনিন্দ সুন্দর খৈয়াছড়া ঝর্ণার প্রথম ক্যাসকেড | মিরসরাই
খৈয়াছড়া ঝর্ণা চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পাহাড়ে অবস্থিত অনন্য সুন্দর জলপ্রপাত। খৈয়াছড়া ঝর্ণার অন্যতম্ আকর্র্ষন এর ক্যাসকেড, এতে ৯টি বড় ঝর্ণার ধাপ (ক্যাসকেড) ও অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন ধাপ রয়েছে। মীরসরাই উপজেলায় অবস্থিত অন্যান্য ঝর্ণা বা জলপ্রপাত সুপ্তধারা ঝর্ণা, সহস্রধারা ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, বাঘ বিয়ানির চেয়ে ভিন্নতর সৌর্ন্দয্য নিয়ে এটি আপনার অপেক্ষায়।

অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটক, যারা চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন কেবল তাদের জন্যই রয়েছে এই ঝর্না দর্শনের সুযোগ। কেননা সরকারি তেমন কোনো উদ্যোগ না থাকায় এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রচার প্রচারণার অভাবে বাংলাদেশের অন্যতম এই জলপ্রপাত রয়ে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। শুধুমাত্র দৃষ্টিনন্দন ঝর্না নয়, পথের দু’পাশে বুনো গাছেরা দৃষ্টি কেড়ে নেবে আপনার। গাছের ফাঁকে ফাঁকে রঙিন ডানা মেলে দেয়া হাজারও প্রজাপতি। চশমা বানরের আনাগোনা ডুমুর গাছের শাখায়। গাছগাছালিতে ভরপুর এ বনাঞ্চল। পাহাড়ের ঝিরিপথে হেঁটে যেতে যেতে সুমধুর পাখির কলরব আপনার মনকে ভালোলাগার অনুভূতিতে ভরিয়ে দেবে। দূর থেকে কানে ভেসে আসবে পাখির কিঁচিরমিঁচির। এভাবে হাঁটতে হাঁটতে একসময় আপনি পৌঁছে যাবেন কাঙ্ক্ষিত ঝর্নাধারার প্রথম ধাপে।




স্থানিয় বাসিন্দাদের সাথে কথাবলে এবং উইকিপিডিয়া ঘেঁটে জানযানা যায়, পাহাড়ি ঢলে সৃস্ট ভুঁইয়ার টিলায় এ ঝর্ণাটি প্রায় ৫০ বছর ধরে প্রবাহিত হচ্ছে। লোকালয় থেকে দুর্গাম ও গভির পাহাড়ি অঞ্চলে এর অবস্থানের কারনে এতদিন তা ছিল লোক চক্ষুর অন্তরালে। গত ৪-৫ বছর ধরে সেখানে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে ।

স্তরে-স্তরে সাজানো এ ঝর্না দেখতে দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড় বাড়ছে সাম্প্রতিক সময়ে। পাহাড়ের সবুজ রঙ আর ঝর্নার স্বচ্ছ জল মিশে মিশে একাকার হয়েছে মিরসরাইয়ের প্রাকৃতিক জলপ্রপাত খৈয়াছড়ায়। নান্দনিক তুলিতে আঁকা এ ছবি দেখে মুগ্ধ হচ্ছে আগত ভ্রমণপ্রেমীরা। খৈয়াছড়া এলাকার পাহাড়ে অবস্থান বলে এর নামকরণ হয়েছে। নয় ধাপের এ ঝর্নায় বেশিরভাগ পর্যটক প্রথম ধাপের সৌন্দর্য দেখেই মাতোয়ারা। 

উঁচু পাহাড়ে উঠে বাকি ধাপগুলোতে যাওয়া খানিকটা পরিশ্রমসাধ্য বলে অনেকেই ঝর্নার প্রথম ধাপের সৌন্দর্য দেখেই ফিরে আসেন। ঝর্নার শেষ ধাপে অনেক প্রশস্ত জায়গা জুড়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এটুকু বলা যায়, ঝর্নার শেষ ধাপ পর্যন্ত যারা আসবেন তারা নিশ্চিত ভাবেই বাংলাদেশের সেরা প্রাকৃতিক ঝর্না উপভোগ করবেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের "রামগড়-সীতাকুন্ড- রিজার্ভ ফরেস্টের" খৈয়াছড়া ঝর্ণাকে কেন্দ্র করে ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যার অন্যতম মূল লক্ষ্য হল অনিন্দ সুন্দর এ ঝর্ণার সংরক্ষণ।

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারের উত্তর পার্শ্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪.২ কিলোমিটার পূর্বে এই ঝর্ণার অবস্থান। ঝর্ণাটির অবস্থান লোকালয় থেকে অনেক গভিরে যার পুরো পথটিই আপনাকে পায়ে হেটে যেতে হবে। 


-------------- ভ্রমণের তথ্য --------------

অবস্থান : ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ্বে মিরসরাই উপজেলার কুণ্ডেরহাট(বড়তাকিয়া)বাজারের উত্তর পার্শ্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪.২ কিলোমিটার পূর্বে জাতীয় উদ্যানর পাহাড়ে এর অবস্থান।

ভ্রমন ক্যাটাগরি     : ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি
ভ্রমনে উপযুক্ত সময়  : বর্ষা কাল (এপ্রিল থেকে অক্টোবর)।

টেইল : ______________________________
বাঁশের সাঁকো, ধানক্ষেত, আঁকাবাঁকা পাহাড়ী পথ, ছরা এবং চারটি সুউচ্চ পাহাড় পেরিয়ে যেতে হবে প্রকৃতির বিস্ময় এই স্বচ্ছ জলরাশির কাছে।

দুরত্ব : বড়তাকিয়া বাজারের উত্তর পাশে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪.২ কিলোমিটার


-------------- নোট পাহড়ি ঝর্ণা, ঝিরি পথ ট্রাকিংয়ের জন্য --------------
  • যে কোন পাহাড়ি এলাকা ভ্রমণের জন্য স্থানিয় গাইড সঙ্গে নিবেন
  • গাইড ফি’র দর-দাম করে/কথা বলে নিবেন।
  • ভাল গ্রিপের ক্যাডস/জুতা ব্যবহার করবেন।
  • পানির বোতল, গ্লকুজ, খাবার সেলাই সঙ্গে রাখবেন।

থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা: ______________________________
খৈয়াছড়া ঝর্নাকে ঘিরে রাস্তা, রেস্টুরেন্ট, কটেজ ইত্যাদি নির্মাণসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে ক্রমান্বয়ে। এখানে এসে খাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি হোটেল রেস্টুরেন্ট পাওয়া যাবে। খুব একটা অভিজাত না হলেও তৃপ্তি সহকারেই খাওয়া যাবে এসব হোটেলে।আর একদিনের ট্যুর হওয়ায় খুব সহজেই রাতের বাসে ঢাকা/ গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে।

যে ভাবে যাবেন : ______________________________
ঢাকার সায়দাবাদ, কলাপুর, গাবতলি থেকে প্রতি রাতেই হানিফ, সৌদিয়া, সোহাগ, ইউনিক, এস.আলম শ্যামলীসহ প্রায় সব কম্পানির বাস  চট্রাগামের উদ্দ্যেশে ছেড়ে যায়। ভ্রমণের ভিন্নতা খুজলে আপনি ট্রেনেও ভ্রমন করতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে মিরসরাই স্টেশনে নেমে যেতে হবে।

Post a Comment

2 Comments

  1. ভাললেগেছে, ধন্যবাদ

    ReplyDelete
  2. দারুন রুমাঞ্চকর, খৈয়াছড়ার আপস্টিমে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টের জন্য

    ReplyDelete